mainadmin
২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৬:১২ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

‘অপহরণ বাণিজ্যের’ নিরাপদ আস্তানা পাহাড়

কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ ও উখিয়ার পাহাড়গুলো ‘অপহরণ বাণিজ্য’র নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুর পর ‘মহামারি আকারে’ দেখা দিয়েছে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়। পাহাড়ের পাদদেশের ফসলি জমি কিংবা পাহাড়ে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিক বা খেলারত শিশু এবং মসজিদে যাওয়ার সময়ও অপহরণের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা।

মুক্তিপণ দিতে না পারলে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে অপহৃতদের। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতিতে একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ক্রমে এ ঘটনা বাড়লেও স্থায়ী কোন সমাধান মিলছে না।

ভয়ংকর সব পদ্ধতি অবলম্বনে মুক্তিপণ আদায় করছে চক্রটি। সবশেষ উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘরের কাছে খেলারত মুহাম্মদ আরাকান (৭) নামের এক শিশু অপহরণের শিকার হয়। অপহরণের পর তার গলা পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে ভিডিও কলে বাবার কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। চক্রটি সাত লাখ টাকা দাবি করে। পরে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠালে অপহরণের এক সপ্তাহ পর ১৫ জানুয়ারি সকালে জীবিত ঘরে ফেরে শিশুটি। গত ৮ জানুয়ারি দুপুরের দিকে খেলার সময় তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।

আরাকানের বাবা আব্দুর রহমান উখিয়ার থাইংখালি ক্যাম্প-১৯ ব্লক সি-১৫ এর বাসিন্দা। ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, ৮ জানুয়ারি দুপুরের পর ঘরের বাইরে আরাকান খেলছিল। হঠাৎ তিনজন নাশতা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে কৌশলে অটোরিকশায় তুলে নেন। পরে অনেক জায়গায় খুঁজেও সন্ধান পাননি। অপহরণ চক্র পরে কল করে সাত লাখ টাকা দাবি করে।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘তারা পাষাণের মতো আমার সন্তানকে মাটিতে গলা পর্যন্ত পুঁতে ভিডিও করে তা আমাদের কাছে পাঠায়। সন্তানের বিপদ দেখে মায়ের নাকফুল বিক্রি ও বিভিন্নজনের থেকে ধারদেনায় দুই লাখ ১০ হাজার টাকা তাদের দেখানো মতো স্থানে পাঠানো হয়। টাকা পেয়ে ছেলেকে হাত-পা বেঁধে কুতুপালং বাজারের পাশে ফেলে যায়।’

গত ১৩ জানুয়ারি প্রতিদিনের মতো মসজিদে ফজরের নামাজে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হন টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের মিনাবাজার ঘোনাপাড়ার বাসিন্দা শাকের আহমদ (৬০)। নামাজ শেষ হলেও বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। রাতে নিখোঁজের স্ত্রীর নম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ফোন করে অপহরণের কথা জানান এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। ৩২ ঘণ্টার মাথায় ১৪ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়।

তবে এজন্য মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে কি না তা বলতে রাজি হননি ভুক্তভোগীর ছেলে আব্দুল্লাহ। উদ্ধারের পর বাবাকে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিপণ পেতে অপহরণকারীরা তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘অপহরণ বাণিজ্যের’ নিরাপদ আস্তানা পাহাড়

পরিচয় মিলেছে সাতক্ষীরার মস্তক বিহীন লাশের

খুলনায় বিদেশী পিস্তল ও দেশী অস্ত্রসহ ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬।

কিশোরগঞ্জ ডায়াবেটিক এন্ড চক্ষু হাসপাতালের পূণঃ উদ্ধোধন৷

বারপাখিয়া দাখিল মাদ্রাসায় জেলা শিক্ষা অফিসারের ঝটিকা পরিদর্শন তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস

ফিনল্যান্ডে জাতীয় শোক দিবস পালন

এ মাসটিই দুর্দশার শেষ মাস: পরিকল্পনামন্ত্রী

স্বামীর হাতে ধরা, পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে

দাফনের তিনদিন পর শিশুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ফিরলেন স্পিকার

১০

ড. ইউনূসসহ চারজনের সম্পদের হিসাব দুদকে দিলো গ্রামীণ টেলিকম

১১

সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমির নামজারি করতে চিঠি

১২

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৫১

১৩

‘রাজধানীকে সমাধানহীন গন্তব্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে’

১৪